Top News

বাঘাইছড়িতে দীর্ঘদিন ধরে উগলছড়ি সড়ক পানিতে তলিয়ে আছে জনদূর্ভোগ চরমে ‎

 বাঘাইছড়িতে দীর্ঘদিন ধরে উগলছড়ি সড়ক পানিতে তলিয়ে আছে জনদূর্ভোগ চরমে

‎বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি:

‎রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের বটতলী থেকে উগলছড়ি সড়কটি পানিতে তলিয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারনে শুধু সড়ক নয় উপজেলার বেশ কিছু নিন্মাঞ্চলের পানি বন্দী আছে, পানিবন্দী অবস্থায় বসবাস করছে প্রায় পাচশতাধীক পরিবার। ফলে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

‎জানা যায়, টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে উগলছড়ি সড়ক সহ একই ওয়ার্ডের এফ ব্লক এলাকার বেশ কয়েকটি সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে এবং পানিবন্দী আছে শতাধীক পরিবার এবং বাঘাইছড়ি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড পূর্ব লাইল্যাঘোনা গ্রামের দুইশতাধীক পরিবার পানিবন্দী আছে দুইমাসেরও অধীক সময় ধরে।  এতে করে স্থানীয়দের দৈনন্দিন চলাফেরা, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে জরুরি রোগী পরিবহনে ভোগান্তি আরও বেশি করে চোখে পড়ছে।

‎বাঘাইছড়ি পৌরসভা ৭ নং ওয়ার্ডের কাদের মেম্বারপাড়া এলাকার বাসিন্দা ফরহাদ আদনান পলাশ বলেন, বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের ফলে নিয়মিত পানিবন্দী হচ্ছে আমাদের এলাকা, এই এলাকা হতে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা সড়কে পানি থাকায় নিয়মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেনা ফলে তাদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হচ্ছে, পানিবন্দী পরিবার গুলো সব সময় ছোট বাচ্চাদের নিয়ে ভয়ে থাকে কখন যেন বাচ্চারা পানিতে পড়ে যায়, পানি বন্দী থাকায় দেখা যায় প্রায় প্রতিটা পরিবার পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে আছে। তিনি বলেন কাপ্তাই হ্রদের পানি নিস্কাশন না করলে এই সমস্যার সমাধান হবে না তাই কতৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন দ্রুত কাপ্তাই হ্রদের পানি কমিয়ে বাঘাইছড়ি উপজেলার নিন্মাঞ্চলকে পানিবন্দী হতে মুক্তি দেয়ার জন্য।

‎সিঙ্গিনালা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ রিয়াজ উদ্দিন বলেন, আমি উগলছড়ি গ্রাম হতে বটতলী -উগলছড়ি সড়ক দিয়ে নিয়মিত মাদ্রাসায় যাতায়াত করি কিন্তু বর্তমানে সড়কটি পানিতে তলিয়ে থাকায় যাতায়াতের জন্য নৌকা ছাড়া কোন উপায় নাই কিন্তু এখানে নির্দিষ্ট কোন নৌযান না থাকায় যাতায়াতে অনেক সমস্যা হয়, ইতিমধ্যে কয়েকটি অটোরিক্সা ও মটর সাইকেল পানি দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে বিলের মধ্যে পড়ে ডুবে যায় এতে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়, দ্রুত কাপ্তাই হ্রদের পানি নিস্কাশন করলে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি মনে করেন।

‎স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ এমদাদ বলেন বাড়িঘর পানিবন্দী হওয়ায় গবাদী পশু বিশেষ করে গরু ছাগল রাস্তায় রাখতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষি পরিবার গুলো এতে পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। হাস মুরগী ও গরু ছাগলের মধ্যেও দেখা দিয়েছে অনেক রোগ বালাই।

‎স্থানীয় কৃষক মো: বিল্লাল হোসেন বলেন গত তিন বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে ধান চাষ করতে পারছিনা কারন অতি বৃষ্টির কারনে চাষের জমিগুলো পানির নিচে তলিয়ে থাকায় চাষাবাদ বন্ধ আছে এতে করে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও খাদ্য সংকটে আমাদের দিন কাটাতে হচ্ছে, আক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন কাপ্তাই হ্রদের পানি বর্ষায় বেশী থাকে আবার শীত মৌসুমে একদম শুকিয়ে যায় ফলে বর্ষায় চাষ করতে পারিনা পানি বেশী থাকায় আবার শীতে চাষ করতে কষ্ট হয় পানি কম থাকায়, কাপ্তাই হ্রদকে কৃষি বান্দব করে তোলার দাবী এই কৃষকের। 

‎উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাঘাইছড়িতে অতিবৃষ্টি ও পাহাড় ক্ষয়ের ফলে প্রতি বছর কাচালং নদী সহ ছোট ছোট খাল গুলোর নাব্যতা হারিয়েছে যার ফলে বৃষ্টি হলেই এই বৃষ্টির পানি কৃষি জমিতে প্রভাব ফেলছে, জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে আবাদী জমি যার কারনে চাহিদা অনুযায়ী চাষাবাদে ব্যহত হচ্ছে বাঘাইছড়ির কৃষকরা, এর সমস্যা নিরসনের জন্য তিনি বলেন কাচালং খাল ও ছোট খালগুলোকে নিয়ম অনুযায়ী খনন করতে পারলে আবাদী জমি গুলো চাষের উপযোগী হবে।

‎এই বিষয়ে উপজেলার নবাগত নির্বাহী অফিসার আমেনা মারজানকে অবগত করলে তিনি বলেন, পানিবন্দী থাকায় জনসাধারণের ভোগান্তি বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক, এই বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষকে আমি জানাবো।

Post a Comment

Previous Post Next Post