বাঘাইছড়িতে টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, কাপ্তাই বাধঁ দিয়ে অধিক পানি ছাড়ার আবেদন
বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি-
মৌসুমী বলয় ঈশান এর ফলে টানা ভারী বর্ষণের কারণে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। জলাবদ্ধতা ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বেশিরভাগ এলাকা এখন পানিবন্দি।
বুধবার (৬ আগস্ট) মধ্যরাত হতে প্লাবিত হতে থাকে বাঘাইছড়ির নিন্মাঞ্চল, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে পানি বৃদ্ধি পায়, বৃষ্টি কমলে পানি কমে বৃষ্টি বাড়লেও পানিও বাড়ে, এদিকে কাপ্তাই লেকের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় ১৮ ইঞ্চি পরিমান জলকপাট খুলে দিয়ে কাপ্তাই হ্রদের পানি কর্ণফুলী নদীতে ফেলা হচ্ছে।
বাঘাইছড়ি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ১০-১৫ ধরে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে এতে করে ফসলী জমি ও নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে বৃষ্টি কমলে পানি কমে আবার বৃষ্টি হলে পানি বৃদ্ধি পায় এতে করে ফসলী জমির ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং নিন্মাঞ্চলের সড়ক প্লাবিত হয়ে মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার চরম অবনতি হয়েছে।
গতকাল (৫আগস্ট) বাঘাইহাট - সাজেক সড়কের মাচালং ব্রিজের পার্শের রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেলে সাজেকে ৩ শতাধীক পর্যটক আটকা পরে, উপজেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় পর্যটকদের থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে, আজ বুধবার সকালে মাচালং সড়ক থেকে পানি নেমে গেলে পর্যটকরা নিরাপদে ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার।
বাঘাইছড়ি পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রহমত উল্লাহ খাজা বলেন, ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের ফলে বাঘাইড়ি পৌরসভা ও উপজেলার ৮ ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চল গুলো প্লাবিত হয়েছে বিশেষ করে ফসলী জমির ক্ষতি হয়েছে বেশী এছাড়াও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে অনেক এলাকার, বাঘাইছড়ির পানিবন্দী মানুষদের উদ্ধার করা বা যেকোন সহযোগীর জন্য প্রস্তুত আছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা, এছাড়াও বন্যার্তদের জন্য প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেন। তিনি পানি কমানোর জন্য জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন কাপ্তাই বাধের পানি আরো বেশী পরিমানে ছাড়তে পারলে বাঘাইছড়ির পানি দ্রুত নেমে যাবে।
বাঘাইছড়ি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড পূর্ব লাইল্যাঘোনা সহ আশ পাশের গ্রাম গুলোর প্রায় প্রতিটি বাড়িই এখন পানিবন্দী, এছাড়াও বানি বন্দি আছে পৌরসভার ১, ২,৩,৪, ৫,৬,৭ নং ওয়ার্ডের নিচু এলাকাগুলো, এছাড়া প্রায় সব গুলো ইউনিয়নের নিচু এলাকার ফসলী জমি ও সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
পূর্ব লাইল্যাঘোনা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইকবাল হোসেন জানান বাঘাইছড়িতে টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হলেই বন্যা হয় যা এখন আমাদের জন্য অনেক ভোগান্তি বিশেষ করে এই এলাকার প্রায় সকল বাড়ি প্লাবিত হয় কিন্তু দুঃখজনক হলো আমাদের এলাকায় একটি আশ্রয়কেন্দ্র নেই। আশ্রয় নেয়ার জন্য অনেক দূরের গ্রামে যেতে পানির মধ্য দিয়ে যা নিরাপদ নয়। পূর্ব লাইল্যাঘোনা এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ জনগণের প্রাণের দাবী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার বলেন, আমরা প্লাবিত এলাকাগুলোর ওপর সর্বক্ষণিক নজর রাখছি। উপজেলার ৫৫ টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বন্যার্তদের আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে, পৌর এলাকার জনসাধারণকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য তিনি আহবান জানিয়েছেন এবং বন্যার্তদের জন্য মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান।
No comments:
Post a Comment